করবীর গাছের বহুগুণ সম্পর্কে জানব ঃ

করবীর অজানা তথ্য ও ভেষজ গুণাবলী করবী একটি ছোট বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ । করবীর ইংরেজি নাম Oleander । বিভিন্ন নামে পরিচিতি। যেমন অশ্বঘ্ন, অশ্বমারক, কনৈলী। এতে প্রচুর দুগ্ধবৎ লেটেক্স আছে । পুস্প সাধারণত গোলাপী বা শ্বেতবর্ণের হয়ে থাকে। করবীর যে অংশ ব্যবহার করা হয়: পাতা এবং মূলের বাকল। করবীর ব্যবহারবিধি ও উপকারিতা: বিষ নিধনে বিষাক্ত প্রাণীর দষ্ট স্থানে করবী রস দিলে বিষ নষ্ট হয়ে যায় । করবী  মূল অন্যন্ত বিষাক্ত তাই এর বাহ্য প্রয়োগ ছাড়া অন্য প্রকারে প্রয়োগ না করাই ভাল । কোন বিষাক্ত প্রাণীর দষ্ট ক্ষতস্থানে করবী মূলের বাকল বেঁটে প্রলেপ দিলে বিষ নষ্ট হয়ে যায় । এতে সাপের বিষও নষ্ট হয়ে যায় বলে মনে করা হয় । কোন কারণে শরীরে করবীর বিষক্রিয়া প্রকাশ পেলে ঘাওয়া ঘি খেতে দিলে বিষক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায় । ইহা কুকুর, বিড়াল, গরু, মহিষ, ঘোড়া প্রভৃতির পক্ষে বিষ স্বরূপ। চর্মরোগে ছালের প্রলেপ খোস পাঁচড়া, কুষ্ঠ প্রভৃতি চর্মরোগে বিশেষ উপকার পাওয়া যায় । উপদংশ- ক্ষত এবং অন্যান্য ক্ষতে করবীমূলের বাকল বেঁটে প্রলেপ দিলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায় । দাদ রোগে করবী পাতা বেঁটে দিলে উপকার পাওয়া যায় । পাতার রসের বাহ্যিক ব্যবহার বিভিন্ন চর্মরোগ উপকার হয়। পাতা সিদ্ধ পানি দিয়া উক্ত ক্ষত ধৌত করলে ক্ষত দ্রুত আরোগ্য হয়।  সর্দিতে করবী মূলের ছালচূর্ণের নস্যি নিলে জমা সর্দি ঝরে মাথা হাল্কা হয় । অন্যান্য রোগে: করবীর আঠার সাথে হরিতকীর গুঁড়ো মিশিয়ে শুকাতে হবে এবং ঐ গুঁড়ো দিয়ে দাঁত মাজলে পায়োরিয়া ভাল হয়ে যায় । করবীর মূল গর্ভকারক । গর্ভপাতের জন্য করবীর মূল স্ত্রীলিঙ্গে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয় । করবীর বিষক্রিয়া হ্রদযন্ত্রের উপর প্রকাশ পায় এবং হৃদযন্ত্রের অবসন্নতা আনয়ন করে । করবীর মূল বা মূলের বাকল অধিক মাত্রায় খেলে মৃত্যু ঘটা অত্যন্ত স্বাভাবিক।   এ করবী মূল, বিশেষ করে মূলের বাকল পাতার চেয়ে অধিক ব্যবহৃত হয় । মূলের বাকলে neridorin  এবং neriodorein  নামক দুটি তিক্ত এলকালয়েড আছে ।  করবী মূল ও মূলের বাকল উত্তম মূত্রকর । মূলের বাকল চূর্ণ সাধারণত ১/৮ আনা মাত্রায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে । করবীর পাতায় Nerrin এবং oleandrin নামক দুটি গ্লুকোসাইড আছে । শরীরের কোন স্থান ফুলে গেলে করবী পাতার ক্বাথ ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায় । কচি পাতার টাটকা রস চোখে দিলে চোখ উঠা উপশম হয়।  করবী অনেক উপকারী একটা গাছ । এর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে । তবে খেয়াল রাখতে হবে উপকারের পাশাপাশি এর বেশ কিছু ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে । সেগুলোর দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে । চিকিতসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা উচিত তা না হলে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ