নারীদের প্রস্রাবে সংক্রমণ :

নারীদের প্রস্রাবে সংক্রমণ নারীদের প্রস্রাবে সংক্রমণ নারীদের খুব পরিচিত রোগ হচ্ছে ইউটিআই বা প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ। প্রতিদিনই এই সমস্যা নিয়ে অনেকেই চিকিত্সকের কাছে যান। এমন কোন নারী একজনও পাওয়া যাবেনা যার জীবনে এই সমস্যা হয়নি। কারো কারো আবার ইউটিআই বারবার হয়ে থাকে। সাধারণভাবে পুরুষের চেয়ে নারীর প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ অনেক বেশি হয়। ছেলেদের যদি বারবার ইউটিআই হয় তবে তাদের মূত্রতন্ত্রের গঠনগত কোন সমস্যা আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা দরকার। এছাড়াও মূত্রতন্ত্রের কোথাও পাথর বা অন্য সমস্যা আছে কিনা সেটা জানাও জরুরি। নারীদের মেনোপজ বা স্থায়ীভাবে ঋতুস্রাব বন্ধ হলে এস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়। হরমোনের অভাবে মূত্রতন্ত্রের স্বাভাবিক যে সুরক্ষা থাকে তা কমে যায়। আমাদের দেশে সব জায়গায় মেয়েদের টয়লের ভালো ব্যবস্থা নেই। এজন্য অনেক মেয়ে বাইরে বের হলে পানি খাওয়ার পরিমাণও কমিয়ে দেয়। এর ফলে প্রস্রাবে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। তাছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণেও পুরুষ ও মহিলাদের বারবার ইউটিআই হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। দীর্ঘ মেয়াদি কোনো রোগের জন্য অনেকে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করেন। এই জাতীয় ওষুধ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। মহিলাদের প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন- ১. ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হওয়া। ২. তলপেটে অস্বস্তি বা ব্যথা করা ৩. মূত্রনালীতে জ্বালাপোড়া করা ৪. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া। ৫. জ্বর, কাপনি হওয়া সবার কিন্তু আবার একই উপসর্গ নাও থাকতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে প্রস্রাব ঘোলা হতে পারে অথবা প্রস্রাব দিয়ে রক্তও যেতে পারে। ইউটিআই বা প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রস্রাব পরীক্ষা করে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে। ডাক্তার যেভাবে প্রেসক্রাইপ করবে সেই ভাবেই ওষুধ খেতে হবে। কেউ একদিন বা দুই দিন ওষুধ খাওয়ার পর আরাম বোধ করেন। তারপর রোগী ওষুধ বন্ধ করে দেন। তারা ভবিষ্যতে নানা সমস্যায় পড়েন। তাদের রোগের জটিলতায় আর এ্যান্টিবায়োটিক খুব একটা কাজে আসে না। বারবার প্রস্রাবে জীবাণু সংক্রমণ হলে সচেতন হতে হবে। নিয়ম মানতে হবে। সংক্রমণ হলে প্রস্রাবের বেগ পেলে প্রস্রাব চেপে রাখা যাবেনা। প্রস্রাবের বেগ হলেই প্রস্রাব করে ফেলতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য এড়িয়ে চলতে হবে। যাদের এই সমস্যা আছে তাদের প্রচুর পানি পান করতে হবে এবং তার সাথে প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। ফলমূল ও সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর আশা আছে। স্বামী-স্ত্রী মিলনের পর প্রচুর পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। একটু সচেতন হলেই প্রস্রাবে সংক্রমণ অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়।  

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ