কলমি শাকের ভেষজগুণ সমৃদ্ধ বিভিন্ন রোগে জীবনদায়ী ঃ
কলমিশাকের গুণাগুণ

কলমি হলো একটি জলজ শাক। এর বৈজ্ঞানিক নাম আইপোসিয়া অ্যাকোয়াটিকা। কলমি শাক পুষ্টিগুণে ভরা। এ শাক দারুণ উপকারী। ক্যালসিয়াম থাকায় এটি হাড়ের গঠনকে মজবুত রাখে। আবার লোহা থাকায় এই শাক খেলে রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন এমন রোগী উপকার পাবেন।
ভিটামিন ‘সি’ থাকায় এটি স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়। কলমির ভেষজগুণও আছে। কলমি শাক খেলে দেহে বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে। মায়েদের স্তনে দুধের পরিমাণ কম থাকলে কলমি শাক খেলে বুকে দুধের পরিমাণ বাড়ে। এ ছাড়াও হিস্ট্রিয়া রোগের বেলায় কলমি শাক ভীষণ উপকারী।
দামে খুব স্বস্তা অথচ পুষ্টিগুণে অনন্য এমন খাবারের নামের তালিকায় উঠে আসবে কলমি শাকের নাম। কলমি শাক মূলত ভাজি অথবা ঝোল রান্না করে ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়। এছাড়া এই শাক দিয়ে পাকোড়া, বড়া ইত্যাদি তৈরি করে খাওয়া যায়।
প্রতি ১০০ গ্রাম কলমি শাকের পুষ্টিমান :
পানি- ৮৯ ৭ গ্রাম,
আমিষ – ৩ ৯ গ্রাম,
লৌহ – ০ ৬ গ্রাম,
শ্বেতসার – ৪ ৪ গ্রাম,
আঁশ – ১ ৪ গ্রাম,
ক্যালসিয়াম – ০ ৭১ মিলিগ্রাম,
থায়ামিন – ০ ৯ মিলিগ্রাম,
নায়াসিন – ১ ৩ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন সি – ৪৯ মিলিগ্রাম,
ক্যালোরি – ৩০ কিলো ক্যালোরি।
কলমি শাকের কিছু উপকারিতা :
১. কলমি শাকে ক্যালসিয়াম থেকে বলে এই শাক হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই ছোটবেলা থেকেই শিশুদের কলমি শাক খাওয়ানো উচিত।
২. এই শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি। ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ করে।
৩. কলমি শাক বসন্ত রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
৪. পর্যাপ্ত পরিমানে লৌহ থাকায় এই শাক রক্ত শূন্যতার রোগীদের জন্য দারুণ উপকারি।
৫. জন্মের পর শিশু মায়ের বুকের দুধ না পেলে মাকে কলমি শাক রান্না করে খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত পরিমানে দুধ পাবে।
৬. নিয়মিত কলমি শাক খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
কলমি শাকের রয়েছে নানান গুণ-
ফোড়া হলে কলমি পাতা একটু আদাসহ বেটে ফোড়ার চারপাশে লাগালে ফোড়া গলে যাবে এবং পুঁজ বেরিয়ে শুকিয়ে যাবে।
পিঁপড়া, মৌমাছি কিংবা পোকামাকড় কামড়ালে কলমি শাকের পাতা ডগা সহ রস করে লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়। এছাড়া
কোষ্ঠ কাঠিন্য হলে কলমি শাকের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।আমাশয়ও এ শরবত কাজ করে।
গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে পানি আসে। কলমি শাক বেশি করে রসুন দিয়ে ভেজে তিন সপ্তাহ খেলে পানি কমে যায় অনেক ক্ষেত্রে।
প্রসূতি মায়েদের শিশুরা যদি মায়ের দুধ কম পায় তাহলে কলমি শাক ছোট মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বাড়ে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন