পটলের ভেষজগুণ সমৃদ্ধ ঃ

পটল  পটল ( ইংরেজি: pointed gourd, parwal/parval ) এক ধরণের সবজি। এটি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ করে উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, বিহার, উত্তর প্রদেশ এবং বাংলাদেশে ভাল জন্মে। এতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন এ ও সি আছে। এছাড়া এতে স্বল্প পরিমাণে ম্যাগ্নেসিয়াম, তামা, প্টাসিয়াম, গন্ধক ও ক্লোরিন আছে। পটল কিছুটা শসা ও ক্ষীরা গোত্রের উদ্ভিদ। এটি খেতেও উপাদেয়। পটল স্যুপ, তরকারী, ভাজী এমনকী মিষ্টান্ন প্রস্তুতিতেও ব্যবহৃত হয়। পটলের উৎপাদনমাত্রা ভালো। ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ফসল পাওয়া যায়। ৩ থেকে ৪ দিন পরপর পটল তোলা যায়। তরকারী হিসেবে পটলের বেশ চাহিদা আছে। পটলের শ্রমিক খরচ কম, নিজেরাই সবকিছু করা যায়। পটল লম্বায় ৫-১৫ সেমি লম্বা হয়ে থাকে। স্বল্পোষ্ণ ও আদ্র আবহাওয়ায় ভাল জন্মে। পুষ্টি তথ্য পটল - Parwal, Parwar, লাউ সরু servings: ১০০ গ্রাম ক্যালরি 30 সোডিয়াম 3 মিলিগ্রাম মোট ফ্যাট 0 গ্রাম পটাসিয়াম 0 গ্রা পরিপূর্ণ 0 গ্রাম মোট carbs 3 গ্রাম Polyunsaturated 0 গ্রাম খাদ্যতালিকাগত ফাইবার 4 গ্রাম Monounsaturated 0 গ্রাম চিনি 0 গ্রাম ট্রান্স 0 গ্রাম প্রোটিন 3 গ্রাম কলেস্টেরল 0 গ্রা একটি 80ভাগ ক্যালসিয়াম 2ভাগ ভিটামিন সি 20ভাগ আয়রন 8ভাগ পটলের উপকারিতা - তাজা পটল হজমশক্তি বাড়ায়। কাশি, জ্বর, রক্তদুষ্টি ভাল করে । হার্টের শক্তি বৃদ্ধি, পিত্তজ্বর, কৃমি সাড়ায় এবং শরীর ঠান্ডা রাখে। তাছাড়াও --- পটলের অগণিত স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা অনেকেই জানেন না। এই সবজিটি একটি পুষ্টিকর খাদ্য। এতে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২ ও ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। আয়ুর্বেদে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করা হয়। পটলের স্বাস্থ্য উপকারিতার বিষয়ে জানবো আজ। ১। হজমের উন্নতি ঘটায় এই সবুজ রঙের সবজিটিতে ভালো পরিমাণে ফাইবার থাকে যা খাদ্য হজমে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা সমাধানে এবং লিভারের সাথে সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করে। ২। কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে পটলের বীজ এমন একটি স্বাস্থ্যকর বীজ যা কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে এবং মল নির্গমনে সাহায্য করে। ৩। ওজন কমতে সাহায্য করে পটলে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। তাই ওজন কমানোর জন্য নিশ্চিন্তে পটলের তরকারি খেতে পারেন। এটি পেট ভরা রাখতে ও ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। ৪। রক্তকে পরিশোধিত করে আরেকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা হচ্ছে এটি রক্তকে পরিশোধিত করে। এর ফলে ত্বকের যত্নেও এই সবুজ সবজিটি ভালো কাজ করে। ৫। কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার কমায় পটলের ছোট গোলাকার বীচিগুলো কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগারের মাত্রা প্রাকৃতিকভাবে কমাতে সাহায্য করে। ৬। ফ্লু নিরাময়ে সাহায্য করে আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ঠান্ডা, জ্বর ও গলা ব্যথা কমতে ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয় পটল। ৭। ত্বকের জন্য উপকারী পটলে ভিটামিন এ ও সি থাকে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে বলে ত্বকের জন্য উপকারী। ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিস্তার রোধ করে বয়সের ছাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে পটল।   পটলের ঔষধি গুনাগুণ : – পটল ও ধনেপাতা থেঁতলে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এই মিশ্রণটিকে ৩ ভাগ করে এর সাথে মধু মিশিয়ে ৩ বাড়ে পান করুন। এতে হজমের সমস্যা দূর হবে। – পটলের রস মাথায় লাগালে মাথা ব্যথা কমে। – পটলের পাতার রস দ্রুত ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে এবং টাকের সমস্যা সমাধানেও কাজে লাগে। – পটলের তরকারী খেলে ত্বকের সমস্যা দূর হয়। নেপালে অসুস্থদের পটলের স্যুপ খাওয়ানো হয়। আমাদের দেশে পটল ভাজি, পটলের দোলমা, মাছ বা মাংসের সাথে বা অন্য সবজির সাথে রান্না করা হয়। দক্ষিণ এশিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে আলুর সাথে রান্না করা হয়। ইন্দোনেশিয়ায় পটল বৈচিত্রময় রান্নায় ব্যবহার করা হয় যেমন- স্টার ফ্রাই, নারিকেল দুধে অথবা ভাপে সিদ্ধ করে রান্না করা হয়। এটি এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতে পাওয়া যায়। সাধারণত গ্রীষ্মের সময় পাওয়া যায় এই সবজিটি।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ