সাইনাসের কারণ ও প্রতিকার ঃ

সাইনাস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার     সাইনাসের সমস্যা হলে দেহে জ্বর এবং দুর্বল একটা ভাব অনুভূত হয়। তবে একটু সচেতন হলে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। সাইনাসের আসলে কোনো কাজ নেই। কেন যে এটা মানুষের শরীরে অবস্থান করে? গবেষকরা অনেক মাথা ঘামিয়েও এর কোনো সমাধানে আসতে পারেননি। তবে এটা হলো আমাদের নাকের চার দিকে কিছু বায়ু প্রকোষ্ঠ থাকে যেগুলোর মধ্যে একটা ঝিল্লি থাকে। যেই ঝিল্লি নাকের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই নাকের কোনো সমস্যা হলে এটাকে অনেক ক্ষেত্রে সাইনাস বলা যায়। তাই দেখা যায়, নাকে যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাইনাসের সমস্যা হয়। নাকের এবং সাইনাসের সমস্যাকে সাধারণত আমরা আলাদা করতে পারি না। সাইনাসগুলোর কাজের ক্ষেত্র হলো, এটা মাথাকে হালকা করে। অনেকে বলে, এটা তাপ প্রতিরোধে কাজ করে। এর সমস্যা খুব প্রচলিত এবং কষ্টদায়ক। সাধারণত, ধুলাবালি থেকে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে যেসব রোগীরা আসে এর মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ নাক সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে আসে। যাদের নাকে সমস্যা থাকে তাদের অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় রোগটা সাইনাসের দিকে চলে যায়। # যেসব লক্ষণে প্রকাশ পায় সাইনাস নাকের সমস্যা ছাড়া সাইনাসের সমস্যা সাধারণত হয় না। আর নাকে যেসব সমস্যা থাকে। ঠিকমতো শ্বাস নিতে পারে না। হাঁচি- কাশি হওয়া। গলার মধ্যে ঢোক গিলতে সমস্যা হয়। নাক দিয়ে রক্তপাত হয়। এগুলো হলো নাকের সমস্যা। এরপরে যখন সাইনাসে চলে যায় তখন মাথায় ব্যথা হয়। নাকে যে ব্লকেজ থাকে, সেটা পরবর্তী সময়ে সাইনাসের দিকে যায়। নাক থেকে কানে চলে যেতে পারে। নাক থেকে গলাতে চলে যেতে পারে। নাকে সমস্যা থাকলে অনেক সময় দেখা যায় শ্বাসকষ্ট হয়তো ভালো হয় না। এরপর যখন সাইনাসের সমস্যা হবে, রোগী অভিযোগ করবে মাথা ব্যথা নিয়ে। সাইনাসের কারণে কপালে, গালের দিকে, চোখের গোড়ায় ব্যথা হতে পারে। সর্দির সমস্যা তো থাকেই। মাথাব্যথা সাধারণত তিন বা চারটা কারণে হয়। মস্তিষ্কের সমস্যায়, দুশ্চিন্তার কারণে, অনেকের চোখের জন্য মাথা ব্যথা করে, আর নাকের সমস্যার কারণে মাথাব্যথা হয়। আগে দেখতে হবে মাথাব্যথার শুরুটা কোথা থেকে হলো। এছাড়া সাইনাসের ব্যথার সঙ্গে জ্বর থাকে। হয় বেশি জ্বর থাকে বা রাতে গা গরম গরম থাকে। চোখের সমস্যা হলে সাধারণত জ্বর থাকে না। মস্তিষ্কের সমস্যাতেও সাধারণত জ্বর থাকে না। # সাইনাসের সমস্যায় চিকিৎসা নাকের সমস্যার একটি বড় কারণ দূষণ। ধুলা-বালুর কারণে সমস্যা হয়। বাইরের ধুলা-বালুকে আমরা হয়তো কিছু করতে পারি না। তবে বাসার জিনিসপত্র ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। বাসার ময়লাটাকে আমরা হয়তো এড়িয়ে যাই। খেয়াল করলে দেখবেন কার্পেট-সোফার মধ্যে হয়তো ধুলা জমে রয়েছে। ধুলার মধ্যে মাইট থাকে। এগুলো থেকে যে লালা, বর্জ্য বের হয় এর কারণে সমস্যা তৈরি করে। এগুলো এলার্জেন। অনেক রোগীকে দেখবেন সকালে ঘুম থেকে উঠে মাথা ধরে থাকে বা হাঁচি হয়। এর কারণ লেপ তোশক কম্বলের মাইট রয়েছে। কার্পেট, সোফা যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এছাড়া লেপ তোশককে যদি রোদে দেয়া হয়, তবে ভালো হয়। মাইটকে মারা সম্ভব নয়। এগুলো দূর করতে নিজেদের সচেতন থাকতে হবে। # সাইনাসের সমস্যা বাড়তে থাকলে যা হয় শরীরে জ্বর জ্বর অনুভব হবে সঙ্গে দুর্বলতা থাকবে। সাইনাসের আশপাশে চোখ, মস্তিষ্ক এগুলো আছে। সংক্রমণ হলে এসব জায়গায় চলে যেতে পারে। তবে এগুলো তেমন হয় না। সাইনাসে মাথা ভারী ভারী লাগে। শরীর দুর্বল লাগবে। কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হবে। # সুস্থ হতে যা করতে হবে ধুলাবালু থেকে দূরে থাকতে হবে। নাকের সমস্যায় কিছু ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। ওষুধে নাকে যে ফোলা ভাব হয়েছে, সেটা কমে যেতে পারে। তাহলে পথটা খুলে যাবে। একবার যদি নাকের পথটা খুলে যায় তখন সাইনাসের পথটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে। তাই আগে নাকের পথকে খুলতে হবে। এ জন্য মেডিসিন দেয়া হয়। এতেই সুস্থ হয়ে যাওয়া সম্ভব। তবে অবস্থা বেশি খারাপ দিকে চলে গেলে সার্জারি পর্যন্ত করা লাগতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দরকার হয় না। মাঝে মাঝে দরকার হয়। সার্জারি হলো শরীরকে দ্রুত ভালো করার জন্য। আর সার্জারি এখন বেশ সহজ হয়ে গেছে, মৃত্যুর কোনো কারণই নেই। অনেকে নাকের সার্জারি করতে ভয় পান যদি সৌন্দর্যের হানি ঘটে। তবে আশার কথা হলো সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার কোনো কারণ নেই এসব সার্জারিতে। রাইনোপ্লাস্টি সার্জারি করলে নাকের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ