শালগমের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন ঃ

শালগম কেউ কেউ শালগমের কথা শুনলেই নাক কুঁচকে বলেন, গন্ধ লাগে। খাইনা। কথা সত্য। আর এই গন্ধের কারণ হলো শালগমে সালফারের উপস্থিতি। মজার ব্যাপার হলো এই গন্ধই কিন্তু ব্রঙ্কাইটিস জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। এক সময় ব্রঙ্কাইটিস হলে লোকে তা নিরাময়ের জন্য দুধ দিয়ে রান্না করে শালগম খেতেন। শালগম বাংলাদেশে সুপরিচিত। শালগম শীতকালীন সবজি। স্ফীত ও রূপান্তরিত মূলই শালগমের প্রধান ভক্ষণযোগ্য অঙ্গ । স্ফীত মূলের যে অংশ মাটির নিচে থাকে তা সাধারণত সাদা অথবা হলুদাভ, কিন্তু । পরের অংশ জাত ভেদে বেগুনী, লাল, সাদা, হলুদ, এমনকি সবুজও হয়। আবারসম্পূর্ণ লাল জাতও আছে। শাঁসের বর্ণ সাদা অথবা হালকা হলুদ। এর ছোট ও ভাল জাতটি মানুষ গ্রহণ করে, বড় আকারের শালগম গুলো পশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শালগমের পুষ্টিগুণ: শালগম মূলত শীতকালীন সবজি। প্রতি ১০০ গ্রাম শালগমে আছে ০.৫ গ্রাম আমিষ, ৬.২ গ্রাম শর্করা, ০.৯ গ্রাম আশ, ০.২ গ্রাম চর্বি, ২৯ কিলোক্যালরি শক্তি, ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৪৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’। শালগম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি সবজি। সাধারণত শীতকালের এই সবজিতে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং প্রচুর পরিমাণে আঁশ আছে। এর পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায় যা অত্যন্ত পুষ্টিকর। আসুন জেনে নেই শালগম খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি? শরীরে অগ্ন্যাশয় যদি যথার্থ ইনসুলিন তৈরি করতে না পারে অথবা শরীরে ইনসুলিনের সঠিক কাজ ব্যাহত হয় তাহলে সেটাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের ঘন ঘন প্রস্রাব হয়; অধিক তৃষ্ণার্ত অনুভব করে এবং বার বার মুখ শুকিয়ে যায়।আক্রান্তরা অতিশয় দুর্বলতা, সার্বক্ষণিক ক্ষুধা, স্বল্প সময়ে দেহের ওজন হ্রাস, চোখে ঝাপসা দেখাসহ নানান সমস্যায় ভোগে। তারা ঔষধের পাশাপাশী সবুজ শাক-সবজি খাবেন। বিশেষ করে শালগম খাবেন। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী। শালগম দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন-সি দেহের কোষ ক্ষয় রোধ করে। শালগমের পাতায় গ্লুকোসিনোলেট নামক উপকারী উপাদান রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। শালগমে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে। শালগম কফ, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমা নিরাময়ে সাহায্য করে শালগম রক্ত পরিশোধিত করে এবং রক্তকণিকা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এটি দেহে রোগসংক্রমণে বাধা দেয় শালগম ক্ষুধামন্দা দূর করে শালগমের রস রক্তে ই।রিক এসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এটি ব্রণসহ ত্বকের অন্যান্য সমস্যা নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে শালগমের জাত: আমাদের দেশে বিভিন্ন দেশের কয়েক জাতের শালগম রয়েছে এ গুলোর মধ্যে। উল্লেখযোগ্য সাদা শাঁস বিশিষ্ট সাদা মূল বিশিষ্ট জাত হচ্ছে- হোয়াইট ফ্ল্যাট ডাচ, হোয়াইট মিলান, সগোয়িন, টোকিওটপ, টোকিও মার্কেট এবং এক্সপ্রেসহোয়াইট। হলুদ শাঁস বিশিষ্ট: ইয়েলো গ্লোব, গোল্ডেন বল, ইয়েলো এবারডিন ইত্যাদি। জাপানি জাত: হোয়াইট লেডি, এক্সপ্রেস হোয়াইট, টোকিও ক্রস ইত্যাদি জাপানি জাত। ভারতীয় জাত: ভারতীয় জাতের মধ্যে- পশু চন্দ্রি, পশু স্বর্ণিমা, পশু কাঞ্চন এবং পশু স্বেতী অন্যতম। শালগমের নানা গুণের কারণেই আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই সবজিটিকে স্থান দিন। যারা শালগম গন্ধের কারণে খেতে চান না, তাদের জন্য পরামর্শ হলো রান্না করার আগে লবণ পানিতে ভাপিয়ে নিয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। আর সালাদ বা ক্ষেত্রে শালগম কুঁচিয়ে লবণ দিয়ে মাখিয়ে রাখুন। ৫/৭ মিনিট পর ভালোমতো চিপে পানি ফেলে দিন। বিকেলের নাশতায় সবজি পাকোড়ায় শালগম দিতে পারেন, শালগমের উপস্থিতি বোঝা যাবে না কিন্তু এর পুষ্টি পাওয়া যাবে। মিক্সড সবজি বা ভেজিটেবল স্যুপে শালগম দিন। পাঠ - ৩ শালগম অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি সবজি। সাধারণত শীতকালের এই সবজিতে প্রচুর ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং প্রচুর পরিমাণে আঁশ আছে। এর পাতা শাক হিসেবে খাওয়া যায় যা অত্যন্ত পুষ্টিকর। আসুন জেনে নেই শালগম খাওয়ার উপকারিতা গুলো। শালগম দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এর লিউটিন নামক উপাদান হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী এতে থাকা ভিটামিন-সি দেহের কোষ ক্ষয় রোধ করে শালগমের পাতায় গ্লুকোসিনোলেট নামক উপকারী উপাদান রয়েছে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে শালগমে প্রচুর আঁশ থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি অত্যন্ত উপকারী শালগম কফ, ব্রঙ্কাইটিস ও অ্যাজমা নিরাময়ে সাহায্য করে শালগম রক্ত পরিশোধিত করে এবং রক্তকণিকা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এটি দেহে রোগসংক্রমণে বাধা দেয় শালগম ক্ষুধামন্দা দূর করে শালগমের রস রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এটি ব্রণসহ ত্বকের অন্যান্য সমস্যা নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে সতর্কতা বয়স্ক ব্যক্তি যাদের অন্ত্রের সমস্যা আছে এবং খাবার হজমে অসুবিধা হয়, তাঁদের শালগম না খাওয়া উচিত। পাঠ - ৪ শালগম ক্রুসিফেরি পরিবারের অন্তর্গত এবং পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে সুপরিচিত। ভিটামিন এ, সি এবং ভিটামিন কে তে ভরপুর থাকে শালগম। শালগমের সবচাইতে ভালো দিক হচ্ছে এদের ক্যালরি খুব কম থাকে। নিয়মিত শালগম খাওয়ার কিছু কারণ সম্পর্কে জেনে নিই চলুন। ১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে যদি ঘন ঘন ঠান্ডা ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে আপনার তাহলে আপনার খাদ্যতালিকায় শালগম যোগ করুন। এটি আপনার ইমিউনিটিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করবে। শালগম পুষ্টি উপাদান ও ফ্ল্যাভনয়েডে সমৃদ্ধ বলে স্বাস্থ্যকর মেমব্রেন এর বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে। ২। খারাপ কোলেস্টেরল কমায় যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে তারা শালগম খেয়ে উপকৃত হতে পারেন। এর কারণ শালগম পাকস্থলীতে অনেক বেশি পিত্তরস শোষণ করতে পারে যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এভাবেই কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে শালগম। ৩। ব্লাডপ্রেসার কমায় ২০১৩ সালে ক্লিনিক্যাল ফার্মাকোলজি নামক ব্রিটিশ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানা যায় যে, শালগম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। শালগম পটাসিয়ামে সমৃদ্ধ বলে ধমনীকে প্রশস্ত করে এবং শরীর থেকে সোডিয়াম বাহির করে দেয়। দেহে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য শালগম। ৪। হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় ভিটামিন ও পটাসিয়াম ছাড়াও শালগম ক্যালসিয়ামেও সমৃদ্ধ বলে হাড়ের জন্য উপকারী। সুস্থ ও শক্তিশালী হাড়ের জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় শালগম যুক্ত করুন। ৫। পরিপাকের উন্নতি ঘটায় শালগমে প্রচুর ফাইবার থাকে বলে হজমে সাহায্য করে। যদি আপনার হালকা কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা থাকে তাহলে শালগম এই পরিস্থিতি থেকে কিছুটা মুক্তি দিতে পারে। ৬। রক্তজমাট বাঁধাতে সাহায্য করে শালগম ভিটামিন কে এর চমৎকার উৎস যা সঠিকভাবে রক্তজমাট বাঁধার জন্য অত্যন্ত আবশ্যক। ক্যালসিয়ামকে প্রসেস করা ও ধমনীর স্বাস্থ্যের জন্যও ভিটামিন কে প্রয়োজনীয়। ধমনীর শক্ত হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে ভিটামিন কে। ৭। দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায় ইমিউন সিস্টেম ঠিকভাবে কাজ করার জন্য এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করার জন্য ভিটামিন এ প্রয়োজনীয়। শালগম ভিটামিন এ তে ভরপুর থাকে বলে দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে। ৮। অ্যানেমিয়া প্রতিরোধ করে শালগম ফলিক এসিডে সমৃদ্ধ যা কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং অ্যানেমিয়া প্রতিরোধ করে। এই ভিটামিন জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সাহায্য করে। ৯। আরথ্রাইটিসের বিরুদ্ধে কাজ করে যারা রিউমাটয়েড আরথ্রাইটেসে ভুগছেন তাদের জন্য উপকারী শালগম খাওয়া। কারণ শালগমে ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালসিয়াম ও কপার থাকে যা এই ধরণের আরথ্রাইটেসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে। এগুলো ছাড়াও শালগম অ্যাজমা, মুত্রথলির সমস্যা, ব্রংকাইটিস, কাশি, বাত, লিভারের সমস্যা, স্থূলতা এবং টিউবারকোলোসিস নিরাময়েও সাহায্য করে।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ